ভারত কৃষি প্রধান দেশ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হয়ে থাকে ।ঠিক সেরকমই একপ্রকার শস্য হলো- মিলেট। আমরা জানি জোয়ার, বাজরা, রাগী- এইতিন প্রকার শস্যকে একত্রে মিলেট বলে। কিন্তুএগুলি ছাড়াও মিলেটের আরো অনেক প্রকারভেদ আছে সেগুলি হল- ফক্সটেল বা কাউন চাল, বার্নইয়ার্ড বা শ্যামা চাল,লিটল মিলেট বা কুটকি, ব্রাউন টপ বা ঘাস কা দানা, কোডো, প্রসো বা চিনা ।আগেকার দিনে মিলেট আদিবাসী এবং সেই সময়ের সকল প্রকার মানুষের মধ্যে প্রচলিত ছিল । কিন্তু ১৯৭০ দশকের সবুজ বিপ্লবের পর ধান গম চাষের তুমুল জনপ্রিয়তার পর মিলেটের প্রচলন অনেকটা কমে যায়। সম্প্রতি ইউনাইটেড নেশন সংস্থা এই বছর (২০২৩) কে “ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিলেট” বলে ঘোষণা করেছে। তারপরেই সরকার থেকে মিলেট নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রচার চালানো হচ্ছে এবং বর্তমান দিনে মিলেট সম্পর্কে মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য অনেক ওয়ার্কশপ শুরু হয়েছে। ঠিক তেমনি পৌষ্টিক লাইফ নামক সংস্থা মিলেট সম্পর্কিত একটি ওয়ার্কসপ আয়োজিত করেছিল ১৬.৯.২৩ তারিখে। এই ওয়ার্কশপের উদ্দেশ্য ছিল মিলেটের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মানুষজনকে সচেতন করা এবং প্রভাবিত করা এবং মিলেট যে ভাতের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টি দায়ক সেই সম্পর্কে জানানো। মিলেটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই মিলেট অল্প খেলেও সারাদিন আর খিদে থাকে না। তাই হিন্দিতে একে “মোটা আনাজ” ও বলা হয়। এছাড়াও মিলেটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আছে ক্যালসিয়াম ফসফরাস প্রোটিন,আর আছে অনেক রকম প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্স যা আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই উপযোগী।পৌষ্টিক লাইফের কর্ণধার মিসেস রুথ চট্টোপাধ্যায় হাতে ধরে মিলেটের বিভিন্ন রকম রান্না অংশগ্রহণকারীদের শিখিয়েছিলেন। এই নিয়ে এটি পৌষ্টিক লাইফের চতুর্থ ওয়ার্কশপ।
সেখানে ছিল জোয়ারএর পরোটা, বার্নইয়ার্ড মিলেট দিয়ে হালুয়া, ফক্সটেল বা কাউন্ চাল দিয়ে ইডলি, ব্রাউন টপ মিলেটের পান্তা ভাত এবং লিটিল মিলেটসের রুটি।
সেখানকার এক অংশগ্রহণকারীর মতে তার অনেকদিন যাবত সুগার ছিল, তিনি ছ মাস মিলেট খাচ্ছিলেন এখন তিনি সুস্থ। তাই সময় যত এগোবে মানুষের মনে মিলেট ধীরে ধীরে জায়গা দখল করে নেবে। তাছাড়া মিলেটকে “ভবিষ্যতের শস্য” হিসেবেও অনেকে মনে করছেন। কারণ- জলের সমস্যার জন্য ধান চাষ করা অসুবিধাজনক হয়ে যাচ্ছে। ঠিকঠাক শীতকাল না পাওয়ায় গম চাষের পরিমাণ কমছে, তাই অনেকেই মনে করছেন যে মিলেট ভবিষ্যতের শস্য হয়ে উঠবে। তাছাড়াও বর্তমানে মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছে, ভালো থাকার সাথে সাথে সঠিক খাওয়া দাওয়া করাটাও জরুরী তাই অনেকে ধীরে ধীরে খাবারে মিলেটের ব্যবহার করছেন।
তথ্য সংকলন – রচয়িতা রায়,
পৌষ্টিক লাইফ,